সফিউল আলম সফিঃ আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার অধিকাংশ কৃষক কৃষাণী এখন মুল ফসলের সংগে সাথী ফসলের চাষ দিন দিন বেড়ে দিয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা যেখানে মুল ফসল হিসেবে আমবাগান তৈরির জন্য গাছ রোপন করেছেন সেই জমিতে কলা গাছ রোপন করেছেন। আমগাছ ও কলা গাছের ফাঁকা জায়গাতে বপন করেছেন তিলের চাষ। সল্পসময়ী ফসল বেগুন ক্ষেতের মধ্যে করলা চাষ করেছেন। যেহেতু করলা গাছ লতাগুল্ম সে জন্য বেগুন গাছকে মাচান হিসেবে ব্যবহার করেছেন। একই ভাবে সেই জমিতে বাঁশের খুঁটির সাথে সুতা দিয়ে মাচান তৈরি করে সল্পসময়ের ফসল- লাউ ও মাচানের নিচে লাল ও পালং শাক চাষ করেছেন ও মাচানের নিচে লাল া। আলু রোপনের সাথে সাথে সে জমিতে, মিষ্টি কুমড়ার চাষ হচ্ছে। কেশুড় ক্ষেতের মধ্যে তেল জাতীয় ফসল তিল চাষ হচ্ছে। পটল রোপন করে তার উপর মাচান করে নীচে সাথী ফসল হিসেবে- পিঁয়াজ, লাল শাক.ধনে পাতা. পালংশাখ, মুলা, ডাঁটার ও ধনিয়া পাতার চাষ করছেন। আলু ক্ষেতের সাথে মিষ্টি কুমড়া, মুলা, বেগুন ,ভুট্রা, গম, মশুড় ডালের চাষ করা হয়ে থাকে। মুখী কচুর সাথে লাল শাক, ডাঁটা ও পাটের শাক ফলাচ্ছেন। কলা রোপনের সাথে সাথে সে জমিতে হলুদ, আলু, বেগুন ,কেশুর কাঁচামরিচ সহ মিষ্টি আলুর চাষ হচ্ছে উল্লেখযোগ্য, এ অঞ্চলের প্রায় সকল ফসলের সাথেই কোন না কোন সাথী ফসলের চাষ হচ্ছে।
উপজেলার রোয়ার গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ, আজাহার আলী, সািহদুল ইসলাল, আবু কালা, আউয়ালগাড়ি গ্রামের আলহাজ দেলোয়ার হোসেন, ভোলা মন্ডল, শাহজালাল, কৃষানী ,মরিয়ম বিবি, কৃষানী খাতিজা বেগম.শান্তা গ্রামের ফোরকান সরদার. হিরা সরদার সহ অনেক কৃষক ও কৃষাণী । তারা জানালেন বেশি করে ধান চাষ করে বিগত কয়েক বছর লোকশান ছাড়া লাভের মুখ দেখতে পাইনি। বেশি লাভের আশায় ও লোকশান পোশাতে এ অঞ্চলের কৃষকরা সাথী ফসলের উপর জোর দিয়েছেন। যা এখানকার কৃষির উৎপাদনকে অনেকটা এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন কৃষকরা।
কৃষকরা আরো জানান, মুল ফসলের সংগে বেশি করে সাথী ফসলের চাষ শুরু করায় বাড়তি লাভ ও আয় হচ্ছে। সকল ফসলের সাথে সাথী ফসল চাষ করতে প্রথমেই ভাবতে হয়- অল্প সময়ের মধ্যে কোন ফসল জমি থেকে আহরণ করা ও বাজার জাত করা সম্ভব হয় সে অনুসারে সেই ফসলের জাত নির্দ্ধারণ করে চাষ করতে হয়।
সাথী ফসলের চাষ করতে গুরুত্বের সাথে খেয়াল রাখতে হয় মুল ফসলের গাছ বৃদ্ধি ও পুর্ণতা পাওয়ার পুর্বেই যেন সাথী ফসল ক্ষেত থেকে ঘড়ে তোলা বা বাজার জাত করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন বলেন, সার্বক্ষনিক আমার নজরদারিতে সকল উপ সহকারীদের মাধ্যমে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের মুল ফসলের সংগে সাথী ফসল বপন ও রোপনের জন্য কৃষক কৃষাণীদেরকে অব্যাহত ভাবে পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রেখেছি।
তিনি বলেন, কৃষি অধিদপ্তর থেকে পাওয়া নানা জাতের সবজি ও শষ্যবীজ সহ কৃষি উপকরণ কৃষকেদের মাঝে বিতরণ অব্যাহত আছে। চলতি মৌসুমে প্রায় আগাম জাতের শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে ১’শ হেক্টর এবং গ্রীস্মকালীন সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্দ্ধারন করেছেন ৩’শ ৫০ হেক্টর। যা বিগত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তিনি আরো জানালেন ধানের দরপতনে কৃষদের ক্ষতি পোহাতে হচ্ছে প্রতিবছর। ধানের লোকশান পোষাতে সকল ফসলের সংগে সাথী ফসল করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষক ও কৃষানীদের।
Leave a Reply